Image description

চট্টগ্রামে নারী রাজনীতিকদের প্রতি 'নোংরামি' এবং 'ব্যক্তিগত আক্রমণ'-এর অভিযোগ তুলে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রামের সাবেক মুখপাত্র ফাতেমা খানম। শুক্রবার রাতে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এই ঘোষণা দেন এবং শনিবার নিজের ফেসবুকে একটি পোস্টেও বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

লাইভে ফাতেমা বলেন, "চট্টগ্রামে যাঁদের সঙ্গে জুলাই আন্দোলন করেছি, তাঁরাই আজ নারীদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের বয়ান তৈরির চেষ্টা করছেন। নারীদের ধ্বংস করার চেষ্টা করছেন। এগুলো নেওয়া যায় না।"

তিনি অভিযোগ করেন, কিছুসংখ্যক মানুষের ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে তাঁদের রাজনীতি হারিয়ে গেছে এবং আন্দোলন থেকে অনেককেই সরে যেতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, "আমাদের লড়াই করার কথা ছিল ফ্যাসিজমের বিরুদ্ধে। কিন্তু লড়াইটা করতে হচ্ছে নিজেদের মানুষের সঙ্গে।"

ফাতেমা তার লাইভে জানান, রাজনীতিতে মেয়েদের নিয়ে কতটা নোংরামি ও ব্যক্তিগত আক্রমণ করা হয়, তা বোঝানো সম্ভব নয়। তিনি অভিযোগ করেন যে, এই কাজগুলো তাঁদের নিজেদের মানুষই করে থাকে। তিনি চট্টগ্রামের নেতৃত্বদানকারী খান তালাত মাহমুদ রাফি, রাসেল আহমেদ এবং রিজাউর রহমানের মতো নেতাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপযুক্ত অবস্থান না নেওয়ার জন্য সমালোচনা করেন।

শনিবারের ফেসবুক পোস্টে ফাতেমা লিখেছেন, তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতি থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। তবে তিনি বিশ্বাস করেন, তার জায়গায় অন্য কেউ আসবেন। তবে চট্টগ্রামের নারী রাজনীতিকদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। 

তিনি বলেন, "এই শহরে যদি কোনো নারী রাজনীতির মাঠে আসতে চান, আমি জানি না, তাঁর ভাগ্যে কী অপেক্ষা করে আছে।" তিনি আশঙ্কা করেন যে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়, বরং নিজ দলের মানুষের কাছ থেকেই নারীদের সহিংসতা, অপমান বা ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হয়।

ফাতেমা খানম চট্টগ্রাম কলেজের ইতিহাস বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী এবং চট্টগ্রাম নগরের সমন্বয়কের দায়িত্বও পালন করেছিলেন। 

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রাম নগরের (বর্তমানে স্থগিত) সাবেক আহ্বায়ক আরিফ মইনুদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, তাদের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে এবং যারা পদ পাবেন না বলে ভাবছেন, তারাই পদত্যাগ করছেন। তিনি বলেন, ফাতেমা খানমকে মাস দুয়েক আগে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছিল, যা পরে তুলে নেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৭ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটি ছাড়া সব কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা হয়।